বাংলাদেশ থেকে ভারতে মেডিকেলে পড়ার যোগ্যতা ২০২৪ [বিস্তারিত জানুন]

বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী মেডিকেলে পড়াশোনা করে দেশ ও জাতির সেবা করার স্বপ্ন দেখেন। ভারত তার উচ্চমানের মেডিকেল শিক্ষা ও গবেষণার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। 

এই কারণেই ভারতের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করার জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। 

ভারতে পড়াশোনা করে আপনি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি, গবেষণা এবং ক্লিনিকাল প্র্যাকটিস সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। 

ভারতের মেডিকেল কলেজগুলোর শিক্ষকবৃন্দ অত্যন্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ যারা শিক্ষার্থীদেরকে সর্বোচ্চ মানের শিক্ষা প্রদান করে। 

আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো বাংলাদেশ থেকে ভারতে মেডিকেলে পড়ার যোগ্যতা নিয়ে। অতএব দেরী না করে চলুন শুরু করি।

bangladesh theke india ta medical porar joggota

আরও দেখুন: মামলা থাকলে কি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাওয়া যায়?

বাংলাদেশ থেকে ভারতে মেডিকেলে পড়ার যোগ্যতা

বাংলাদেশ থেকে ভারতে মেডিকেলে পড়ার জন্য কিছু প্রাথমিক যোগ্যতা পূরণ করতে হয়। প্রথমত, শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় (১০ম ও ১২শ শ্রেণি) ভাল ফলাফল করতে হয়, বিশেষ করে বিজ্ঞান বিষয়ে।

দ্বিতীয়ত, মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য সাধারণত NEET (National Eligibility cum Entrance Test) নামক একটি প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়। তৃতীয়ত, শিক্ষার্থীদের বয়স ১৭ বছর বা তার বেশি হতে হবে।

এছাড়া, ভারতীয় মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোটা ও বিশেষ শর্তাবলী থাকতে পারে, যা সংশ্লিষ্ট কলেজের নীতিমালা অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে মেডিকেলে পড়ার জন্য নিম্নোক্ত যোগ্যতা সমূহ প্রয়োজন বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

১. শিক্ষাগত যোগ্যতা

যেকোনো বোর্ড থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করা বা সমমানের কোনো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং ইংরেজি এই চারটি বিষয় অবশ্যই থাকতে হবে। এই চারটি বিষয়ে সব মিলিয়ে কমপক্ষে ৫০% নম্বর পেতে হবে। কিছু কলেজে এই শতাংশের কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।

২. বয়স

সাধারণত ভর্তির সময় প্রার্থীর বয়স ১৭ বছর হতে হবে। তবে কিছু কলেজে বয়সের সীমা কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।

৩. ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (NEET)

ভারতের সরকারি ও বেসরকারি সব মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য NEET পরীক্ষা পাশ করা বাধ্যতামূলক। এই পরীক্ষাটি ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (ICMR) দ্বারা পরিচালিত হয়। NEET এর সিলেবাসে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং ইংরেজি থাকে। এই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করলে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য একটি ভালো স্থান নিশ্চিত করা যায়।

৪. মেডিকেল কলেজের নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা

কিছু বেসরকারি মেডিকেল কলেজ নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা নেয়। এই পরীক্ষাগুলোতে NEET এ উত্তীর্ণ হওয়া প্রার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারে।

৫. কোটা

কিছু মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন কোটার আসন থাকে। যেমন: SC/ST/OBC কোটা, ইউআর কোটা ইত্যাদি। এই কোটার আসনগুলোতে ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট শর্তাবলী থাকে।

আরও দেখুনঃ IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায়

বাংলাদেশ থেকে ভারতে মেডিকেলে পড়ার জন্য প্রস্তুতি

NEET একটি কঠিন পরীক্ষা। এই পরীক্ষার জন্য ভালো প্রস্তুতি নিতে হলে অন্তত এক বছর আগে থেকেই পড়াশোনা শুরু করা উচিত। ভালো মানের কোচিং এবং স্টাডি ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করে পড়াশোনা করা উচিৎ।

ভারতে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি বেশ প্রতিযোগিতামূলক। তবে ভালো প্রস্তুতি ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

ভারতে মেডিকেল কলেজে পড়ার খরচ কত?

মেডিকেল কলেজে পড়ার খরচ জানা একজন শিক্ষার্থীর জন্য খুবই জরুরি। শুধুমাত্র টিউশন ফি নয় আরও অনেক ধরনের ফি জমা দিতে হয়। এই ফিগুলো সাধারণত ভর্তির সময় একবার এবং তারপর প্রতি বছর জমা দিতে হয়। নিচে ভারতে মেডিকেল কলেজে পড়ার জন্য যেসব খরচ হয় তা উল্লেখ করা হলো।

১. ওয়ান টাইম ফি

ভর্তির সময় সাধারণত ভর্তি ফি, সতর্কতা ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি এবং প্রথম বছরের শিক্ষা ফি জমা দিতে হয়। এই ফিগুলোর পরিমাণ কলেজভেদে আলাদা হতে পারে।

২. ইয়ারলি ফি

প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ফি, স্টুডেন্ট ইউনিয়ন ফি, লাইব্রেরি ফি, মেডিকেল রিসার্চ ফি এবং মেডিকেল জার্নাল ফি জমা দিতে হয়। এই ফিগুলো শিক্ষার্থীদেরকে কলেজের সুবিধা এবং পরিষেবাগুলো ব্যবহার করার সুযোগ দেয়।

৩. অন্যান্য খরচ

উপরের ফিগুলো ছাড়াও শিক্ষার্থীদের আবাসন, খাবার, পোশাক, পরিবহন, বইপত্র এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত খরচের জন্য অর্থের প্রয়োজন হবে। এই খরচগুলো শহর এবং জীবনযাত্রার মান অনুযায়ী আলাদা হতে পারে।

ভারতে সাধারণত একটি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সময় প্রায় ₹৫,০০০ এবং প্রতি বছর প্রায় ₹৩০,০০০ খরচ হতে পারে। এছাড়াও বছরে আরও প্রায় ₹৫০,০০০ অন্যান্য খরচের জন্য প্রয়োজন হতে পারে।

আরও দেখুনঃ মেডিকেল ছাড়া কোন দেশে যাওয়া যায়

ভারতের মেডিকেল কলেজ বনাম বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজ

ভারত ও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দুটি প্রতিবেশী দেশ যাদের মধ্যে শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা সবসময়ই রয়েছে। মেডিকেল শিক্ষা এই প্রতিযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 

উভয় দেশেই মেডিকেল কলেজগুলো উচ্চমানের চিকিৎসক তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে। তবে বিভিন্ন কারণে ভারত ও বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজগুলির মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো।

১. শিক্ষার মান

ভারতে মেডিকেল শিক্ষার একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং দেশটিতে বেশ কয়েকটি বিশ্বমানের মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এআইআইএমএস, জিপমার, এমএএমসি ইত্যাদি কলেজগুলো গবেষণা ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।

বাংলাদেশেও মেডিকেল শিক্ষার মান উন্নতির পথে। দেশের কয়েকটি মেডিকেল কলেজ আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদান করে। তবে ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে মেডিকেল কলেজগুলোর সংখ্যা কম এবং গড়ে গবেষণা ও অবকাঠামোর দিক থেকে ভারতের মেডিকেল কলেজগুলোর চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে।

২. প্রবেশ পরীক্ষা

ভারতে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য NEET (National Eligibility cum Entrance Test) নামে একটি জাতীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষাটি খুবই প্রতিযোগিতামূলক এবং লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

বাংলাদেশে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজগুলি নিজস্ব প্রবেশ পরীক্ষা নেয়। এছাড়া সরকারি কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য ন্যাশনাল মেডিকেল পরিক্ষা দিতে হয়।

৩. শিক্ষাক্রম

ভারতে এমবিবিএস কোর্সের পাঠ্যক্রম এমবিবিএস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া দ্বারা নির্ধারিত।

পাঠ্যক্রমটি খুবই বিস্তৃত এবং তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি ক্লিনিকাল প্রশিক্ষণের উপরও জোর দেওয়া হয়।

বাংলাদেশেও এমবিবিএস কোর্সের পাঠ্যক্রম ভারতের মতোই। তবে কিছু ক্ষেত্রে পাঠ্যক্রমে সামান্য পার্থক্য থাকতে পারে।

৪. খরচ

ভারতে সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ফি অনেক কম। তবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ফি খুবই বেশি। বাংলাদেশেও সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ফি অনেক কম। তবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলিতে ফি ভারতের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।

৫. কর্মসংস্থান

ভারতে চিকিৎসকদের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। সরকারি হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি সব জায়গায় চিকিৎসকদের চাহিদা রয়েছে।

বাংলাদেশেও চিকিৎসকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। তবে ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে চিকিৎসকদের চাহিদা কিছুটা কম।

আরও জানুনঃ সরকারিভাবে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়

শেষ কথা।

আমাদের আজকের আলোচনা এই পর্যন্তই। এছাড়া এই বিষয়ে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন। নিত্য নতুন আপডেট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ সবাইকে।

আর ও পড়ুনঃ

DISCLAIMER

এই ব্লগ পোস্ট আর্টিকেল এবং আমাদের স্যোসাল মিডিয়া একাউন্ট এর তথ্য সম্পূর্ন নিরাপদ, যাচাই করা, বিভিন্ন মাধ্যমে থেকে রিসার্স করে সবার উপকারের জন্য নেওয়া হয়েছে। আমরা বন্ধ পরিকর আপনাদের কে নির্ভুল নিতে, তারপর ও যদি আপনাদের কোন অভিযোগ ও কোন বেপার জানার থাকে আমাদের কে মেইল করুন [email protected] ধন্যবাদ।

WhatsApp চ্যানেল এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us
Telegram চ্যানেল এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us
 Facebook Page এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us 
Quora তে আমাদের কে ফলো করুন- Follow Us
Pinterest এ আমাদের কে ফলো করুন- Follow Us
Twitter এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us
Web Stories এ আমাদের কে ফলো করুন Follow Us
TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন Follow Us

Author

  • Ruthy Musa

    আমি রুথি মুসা, Wikiofpro.com-এর একজন লেখক। আমি পাঠকদের তথ্য প্রদান এবং অনুপ্রাণিত করার জন্য সাধারণ বিষয়গুলি গভীরভাবে শেয়ার করি। আমার লক্ষ্য হল সঠিক তথ্য এবং ব্যাপক জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা, যাতে তারা আরও সাবলীল এবং সফলভাবে নিজেদের জীবন পরিচালনা করতে পারে।

    View all posts

Leave a Comment