সুইডেন, ইউরোপের অন্যতম সুন্দর এবং প্রগতিশীল দেশ, তার উন্নত জীবনযাত্রা, উচ্চমানের শিক্ষা ব্যবস্থা, এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। বাংলাদেশ থেকে সুইডেনে ভ্রমণ, শিক্ষা বা কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়।
এই নিবন্ধে, আমরা বাংলাদেশ থেকে সুইডেন যাওয়ার প্রয়োজনীয় তথ্য, ভিসা প্রক্রিয়া, ভ্রমণের ব্যবস্থা, এবং সুইডেনের কিছু আকর্ষণীয় স্থান নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হলো বাংলাদেশ থেকে সুইডেন যাওয়ার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা।
আরও পড়ুনঃ মামলা থাকলে বিদেশ যাওয়া যায় কি না, জানুন
বাংলাদেশ থেকে সুইডেন যাওয়ার উপায়
বাংলাদেশ থেকে একজন নাগরিক সুইডেনে কয়েকটি উপায়ে যেতে পারে-যেমন
১. উচ্চ শিক্ষার জন্য: উচ্চ শিক্ষার জন্য বাংলাদেশের নাগরিক সুইডেন যেতে পারে।
২. টুরিস্ট/ ভিজিটর হিসাবে: একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাংলাদেশ নাগরিক ভ্রমণ বা ভিজিটর হিসাবে সুইডেন যেতে পারে।
৩. ওয়ার্ক পারমিট হিসাবে: কর্ম সংস্থানের জন্য বাংলাদেশ নাগরিক সুইডেন যেতে পারে।
পরিবহন: বাংলাদেশ থেকে সুইডেন যেতে পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম হলো বিমান।
বাংলাদেশ থেকে সুইডেন যাওয়ার উপায়গুলো ধাপে ধাপে নিম্নে আলোচনা করা হলো।
বাংলাদেশ থেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য সুইডেন যাওয়ার উপায়
সুইডেন তার বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা এবং উন্নত জীবনযাত্রার জন্য সুপরিচিত। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য সুইডেনে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা একটি স্বপ্নের মতো হতে পারে।
নিম্নে, আমরা সুইডেনে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, ভিসা প্রক্রিয়া, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি, ব্যয় এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আলোচনা করব যা আপনাকে আপনার উচ্চশিক্ষার যাত্রা সফল করতে সাহায্য করবে।
১. সুইডেনে উচ্চশিক্ষার সুযোগ
সুইডেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি উচ্চমানের শিক্ষাদান এবং গবেষণার জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে। এখানে ব্যাচেলর, মাস্টার্স এবং পিএইচডি প্রোগ্রামগুলি পাওয়া যায়। সুইডেনের কিছু শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি হলো:
- কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট
- উপসালা ইউনিভার্সিটি
- লুন্ড ইউনিভার্সিটি
- কেথেম ইউনিভার্সিটি
২. বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন প্রক্রিয়া
গবেষণা এবং বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন
প্রথমে, আপনাকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রামগুলি গবেষণা করতে হবে এবং আপনার পছন্দের প্রোগ্রাম এবং বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করতে হবে।
আবেদন ফর্ম পূরণ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। সাধারণত, আবেদন ফর্মের সাথে নিম্নলিখিত ডকুমেন্টস জমা দিতে হয়:
- পাসপোর্ট কপি
- পূর্ববর্তী শিক্ষার সার্টিফিকেট এবং মার্কশিট
- ইংরেজি ভাষার দক্ষতার প্রমাণ (TOEFL/IELTS)
- প্রোগ্রামের উপর নির্ভর করে SOP (Statement of Purpose) এবং LOR (Letter of Recommendation)
৩. ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
আবেদন ফর্ম পূরণ
সুইডেনে উচ্চশিক্ষার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা প্রয়োজন হয়। অনলাইনে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে যা সুইডিশ মাইগ্রেশন এজেন্সির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
- ভর্তি নিশ্চিতকরণের প্রমাণ
- পাসপোর্ট
- ফটোগ্রাফ
- স্বাস্থ্য বিমা
- আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ
ভিসা ফি
ভিসা আবেদন ফি জমা দিতে হবে, যা সাধারণত ১,০০০ SEK থেকে ১,৫০০ SEK (সুইডিশ ক্রোনা) এর মধ্যে থাকে।
৪. ব্যয় এবং স্কলারশিপ
সুইডেনে উচ্চশিক্ষার ব্যয় তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে, তবে বিভিন্ন স্কলারশিপ পাওয়া যায় যা ব্যয় কমাতে সাহায্য করতে পারে। কিছু জনপ্রিয় স্কলারশিপগুলি হলো:
- সুইডিশ ইনস্টিটিউট স্কলারশিপ
- ইরাসমাস মুন্ডুস স্কলারশিপ
- বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক স্কলারশিপ
৫. আবাসন ব্যবস্থা
সুইডেনে থাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল, প্রাইভেট অ্যাপার্টমেন্ট, এবং শেয়ারড অ্যাপার্টমেন্টের মতো বিভিন্ন বিকল্প পাওয়া যায়। আপনার বাজেট এবং পছন্দ অনুযায়ী উপযুক্ত বিকল্প নির্বাচন করুন।
৬. কাজের সুযোগ
সুইডেনে শিক্ষার্থীরা পার্ট-টাইম কাজ করার সুযোগ পায়, যা শিক্ষার খরচ এবং অন্যান্য ব্যয় মেটাতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারে।
৭. সংস্কৃতি এবং ভাষা
সুইডেনে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সহায়ক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ রয়েছে। যদিও সুইডিশ ভাষা শেখা সুবিধাজনক হতে পারে, তবে অধিকাংশ লোক ইংরেজিতে দক্ষ এবং ইংরেজিতেই বেশিরভাগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
সুইডেনে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অসাধারণ সুযোগ। সঠিক পরিকল্পনা, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এবং সঠিক তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে আপনি সহজেই সুইডেনে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে পারেন।
আশা করি, উপরিউক্ত তথ্য থেকে আপনাকে সুইডেনে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। আপনার যাত্রা সফল ও আনন্দদায়ক হবে।
আরও জানুনঃ সরকারিভাবে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়
বাংলাদেশ থেকে টুরিস্ট হিসাবে সুইডেন যাওয়ার উপায়
সুইডেন, ইউরোপের অন্যতম সুন্দর এবং আকর্ষণীয় দেশ, যা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থাপত্য এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতির জন্য পরিচিত। বাংলাদেশের অনেক ভ্রমণপিপাসু সুইডেন ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেন।
নিম্নে, আমরা বাংলাদেশ থেকে সুইডেনে পর্যটক হিসেবে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, ভিসা প্রক্রিয়া, ব্যয় এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আলোচনা করব। এই তথ্যগুলো আপনাকে সুইডেন ভ্রমণের প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে এবং আপনার ভ্রমণকে আরও আনন্দদায়ক করবে।
১. ভিসার ধরন এবং প্রয়োজনীয়তা
পর্যটন ভিসা
বাংলাদেশ থেকে সুইডেনে পর্যটক হিসেবে যাওয়ার জন্য প্রধানত শেঙ্গেন ভিসার প্রয়োজন হয়। শেঙ্গেন ভিসা আপনাকে সুইডেনসহ অন্যান্য শেঙ্গেন দেশের মধ্যে অবাধে ভ্রমণ করতে সক্ষম করবে।
- প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস:
- বৈধ পাসপোর্ট (যার মেয়াদ অন্তত ছয় মাসের জন্য বৈধ হতে হবে)
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি (সাম্প্রতিক তোলা)
- ভিসা আবেদন ফর্ম (সঠিকভাবে পূরণ করা)
- ভ্রমণ বিমা (৩০,০০০ ইউরোর কভারেজ সহ)
- আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট, স্পন্সরশিপ লেটার)
- হোটেল বুকিং এবং ফ্লাইট টিকেটের কপি
- ভ্রমণ পরিকল্পনা (যাত্রাপথ এবং সময়সূচি)
২. ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
আবেদন ফর্ম পূরণ
সুইডেনের ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। সুইডিশ মাইগ্রেশন এজেন্সির ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফর্ম পূরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করুন।
ডকুমেন্ট জমা
আবেদন ফর্ম পূরণের পর আপনাকে সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে।
সাক্ষাৎকার
কিছু ক্ষেত্রে দূতাবাস সাক্ষাৎকারের জন্য আপনাকে ডেকে আনতে পারে। সাক্ষাৎকারে সত্যি ও স্পষ্টভাবে উত্তর দিন এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাথে নিয়ে যান।
৩. ফ্লাইট বুকিং
ঢাকা থেকে স্টকহোমের জন্য সরাসরি এবং সংযোগকারী ফ্লাইট রয়েছে। আপনার বাজেট এবং সুবিধা অনুযায়ী ফ্লাইট নির্বাচন করুন। কিছু জনপ্রিয় এয়ারলাইনস হলো:
- কাতার এয়ারওয়েজ
- এমিরেটস
- তুর্কিশ এয়ারলাইন্স
- এয়ার ইন্ডিয়া
৪. থাকার ব্যবস্থা
সুইডেনে থাকার জন্য হোটেল, হোস্টেল, এবং এয়ারবিএনবির মতো বিভিন্ন বিকল্প রয়েছে। আপনার বাজেট এবং পছন্দ অনুযায়ী উপযুক্ত বিকল্প বেছে নিন। কিছু জনপ্রিয় থাকার জায়গা:
- স্টকহোম সিটি হোস্টেল
- গোটেনবার্গ সেন্ট্রাল হোস্টেল
- হোটেল ডিপ্লোম্যাট স্টকহোম
- স্ক্যান্ডিক গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল
৫. ভ্রমণ বিমা
সুইডেনে ভ্রমণের জন্য পর্যাপ্ত কভারেজ সহ একটি ভ্রমণ বিমা নেওয়া আবশ্যক। এটি যেকোনো জরুরি চিকিৎসা পরিস্থিতিতে আপনার সহায়ক হবে। নিশ্চিত করুন যে বিমার কভারেজ শেঙ্গেন ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করে।
৬. সুইডেনে দর্শনীয় স্থান
সুইডেন তার দর্শনীয় স্থানগুলির জন্য বিখ্যাত। এখানে কিছু প্রধান পর্যটন আকর্ষণ:
- স্টকহোমের পুরাতন শহর (গ্যামলা স্ট্যান): মধ্যযুগীয় স্থাপত্য এবং সরু রাস্তার জন্য বিখ্যাত।
- ভাসা মিউজিয়াম: সুইডেনের সামুদ্রিক ইতিহাসের একটি অনন্য সংগ্রহশালা।
- ড্রটনিংহোলম প্যালেস: রাজকীয় বাসভবন এবং ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান।
- কিরুনা এবং আইস হোটেল: উত্তর সুইডেনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং বরফের হোটেলে থাকার অভিজ্ঞতা নিতে পারেন।
- স্কানসেন: বিশ্বের প্রথম ওপেন-এয়ার মিউজিয়াম।
৭. আবহাওয়া এবং পোশাক
সুইডেনের আবহাওয়া পরিবর্তনশীল, তাই ভ্রমণের সময় সঠিক পোশাক সঙ্গে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে ভারী জ্যাকেট এবং গরম পোশাক প্রয়োজন হবে, আর গ্রীষ্মে হালকা কিন্তু স্যুটেবল পোশাক সঙ্গে রাখা ভাল।
৮. যাতায়াত
সুইডেনে যাতায়াতের জন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। ট্রেন, বাস, এবং ট্রামের মাধ্যমে সহজেই যাতায়াত করা যায়। এছাড়াও, ট্যাক্সি এবং রেন্টাল কারও পাওয়া যায়।
৯. ব্যয়
সুইডেনে ভ্রমণের ব্যয় তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে। তবে, পরিকল্পনা অনুযায়ী বাজেট তৈরি করলে খরচ কিছুটা কমানো সম্ভব। কিছু প্রয়োজনীয় খরচ:
- ভিসা ফি: ৬০ ইউরো (প্রায়)
- ফ্লাইট টিকেট: ৫০,০০০-৮০,০০০ টাকা (প্রায়)
- থাকার ব্যয়: ১০০-২০০ ইউরো/রাত (প্রায়)
- খাবার: ২০-৫০ ইউরো/দিন (প্রায়)
- পাবলিক ট্রান্সপোর্ট: ২০-৩০ ইউরো/সপ্তাহ (প্রায়)
সুইডেনে পর্যটক হিসেবে যাওয়া আপনার জীবনের একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা হতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ, এবং ভ্রমণের প্রস্তুতি নিয়ে আপনি সহজেই সুইডেন ভ্রমণের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন।
আশা করি, উপরিউক্ত তথ্য থেকে আপনাকে সুইডেনে পর্যটক হিসেবে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। আপনার সুইডেন ভ্রমণ সফল এবং আনন্দদায়ক হোক!
আরও দেখুনঃ মেডিকেল ছাড়া কোন দেশে যাওয়া যায়
বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট হিসাবে সুইডেন যাওয়ার উপায়
সুইডেন, তার উন্নত অর্থনীতি, উচ্চ জীবনযাত্রার মান এবং অসাধারণ কর্মপরিবেশের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। বাংলাদেশ থেকে অনেক পেশাদার ব্যক্তি সুইডেনে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন।
নিম্নে, আমরা বাংলাদেশ থেকে সুইডেনে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয়তা, ব্যয়, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আলোচনা করব। এই তথ্যগুলো আপনাকে সুইডেনে কাজের স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করবে।
১. ওয়ার্ক পারমিটের প্রকারভেদ
সুইডেনে কাজ করতে চাইলে আপনার ওয়ার্ক পারমিটের প্রয়োজন হবে। সাধারণত সুইডেনে ওয়ার্ক পারমিট তিন ধরনের হয়ে থাকে:
১.১. সাধারণ ওয়ার্ক পারমিট
যে কোনও ধরনের চাকরির জন্য সাধারণ ওয়ার্ক পারমিটের প্রয়োজন হয়।
১.২. ইউরোপীয় ব্লু কার্ড
এই ভিসাটি উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পেশাদারদের জন্য দেওয়া হয়।
১.৩. স্বল্পমেয়াদি ওয়ার্ক পারমিট
এই পারমিটটি সাধারণত ৩ মাসের কম সময়ের জন্য প্রদত্ত হয়।
২. ওয়ার্ক পারমিটের জন্য যোগ্যতা
ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার জন্য আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে:
- বৈধ পাসপোর্ট
- সুইডিশ নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অফার লেটার
- চাকরির শর্তাবলী সুইডিশ আইন অনুসারে হতে হবে
- চাকরির বেতন সুইডিশ বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে
- চাকরির সময়কাল ৩ মাসের বেশি হতে হবে
৩. আবেদন প্রক্রিয়া
৩.১. চাকরির অফার প্রাপ্তি
প্রথমে, আপনাকে সুইডিশ নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অফার পেতে হবে। সুইডিশ নিয়োগকর্তারা সাধারণত তাদের ওয়েবসাইট বা চাকরির পোর্টালে চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে।
৩.২. আবেদন ফর্ম পূরণ
ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। সুইডিশ মাইগ্রেশন এজেন্সির ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফর্ম পূরণ করুন।
৩.৩. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
ওয়ার্ক পারমিটের জন্য নিম্নলিখিত ডকুমেন্টগুলি প্রয়োজন:
- বৈধ পাসপোর্ট
- চাকরির অফার লেটার
- চাকরির শর্তাবলীর প্রমাণ
- বেতন এবং অন্যান্য সুবিধার প্রমাণ
- স্বাস্থ্য বিমা
- আবাসনের ব্যবস্থা সংক্রান্ত তথ্য
৪. ভিসা ফি এবং অন্যান্য ব্যয়
ওয়ার্ক পারমিটের জন্য ভিসা ফি প্রায় ২,০০০ থেকে ৩,০০০ SEK (সুইডিশ ক্রোনা) হতে পারে। এছাড়াও, অন্যান্য ব্যয় যেমন ভ্রমণ বিমা, স্বাস্থ্য বিমা, এবং আবাসনের ব্যয় সম্পর্কে পরিকল্পনা করা উচিত।
৫. থাকার ব্যবস্থা
সুইডেনে থাকার জন্য হোস্টেল, প্রাইভেট অ্যাপার্টমেন্ট এবং শেয়ারড অ্যাপার্টমেন্টের মতো বিভিন্ন বিকল্প রয়েছে। আপনার বাজেট এবং পছন্দ অনুযায়ী উপযুক্ত বিকল্প বেছে নিন।
৬. যাতায়াত
সুইডেনে যাতায়াতের জন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। ট্রেন, বাস, এবং ট্রামের মাধ্যমে সহজেই যাতায়াত করা যায়। এছাড়াও, ট্যাক্সি এবং রেন্টাল কারও পাওয়া যায়।
৭. সুইডেনে কাজের পরিবেশ
সুইডেনে কর্মপরিবেশ অত্যন্ত সহায়ক এবং ইতিবাচক। এখানে কাজের সময়, ছুটি, এবং অন্যান্য সুবিধা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুইডেনে সাধারণত সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করতে হয় এবং বছরে প্রায় ২৫ দিন ছুটি পাওয়া যায়।
৮. সুইডেনের ভাষা
যদিও সুইডেনের বেশিরভাগ লোক ইংরেজিতে দক্ষ, তবে সুইডিশ ভাষা শেখা আপনার কর্মজীবনে এবং দৈনন্দিন জীবনে সুবিধা আনতে পারে। বিভিন্ন ভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে সুইডিশ ভাষা শেখা সম্ভব।
সুইডেনে কাজ করার স্বপ্ন পূরণ করতে হলে সঠিক পরিকল্পনা, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ এবং ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুইডেনে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার প্রক্রিয়াটি যতটা জটিল মনে হতে পারে, সঠিক প্রস্তুতি এবং তথ্যের মাধ্যমে এটি সম্পন্ন করা সম্ভব।
আশা করি, উপরিউক্ত তথ্য থেকে আপনাকে সুইডেনে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। আপনার কর্মজীবন সফল এবং সমৃদ্ধ হোক!
আরও আর্টিকেলঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে
উপসংহার
সুইডেনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হলে সঠিক পরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিসা প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে থাকার ব্যবস্থা এবং যাতায়াতের সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনার সুইডেন ভ্রমণ সহজ ও আনন্দদায়ক হবে।
আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনাকে বাংলাদেশ থেকে সুইডেন যাওয়ার উপায় নিয়ে সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। সুইডেনে আপনার যাত্রা সফল এবং সুখময় হোক! ধন্যবাদ
আর ও পড়ুনঃ
- মেডিকেল ছাড়া কোন দেশে যাওয়া যায়
- সরকারিভাবে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়
- বাংলাদেশ থেকে ফিনল্যান্ড যাওয়ার উপায়
- বাংলাদেশ থেকে আইসল্যান্ড যাওয়ার উপায়
- বাংলাদেশ থেকে ডেনমার্ক যাওয়ার উপায়
- IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায়
- বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া ভিসা কিভাবে পাওয়া যায়
- বাংলাদেশ থেকে ফিনল্যান্ড যাওয়ার উপায়
- বাংলাদেশ থেকে বেলজিয়াম যাওয়ার উপায়
- বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া ভিসা কিভাবে পাওয়া যায়
- বাংলাদেশ থেকে আইসল্যান্ড যাওয়ার উপায়
- বাংলাদেশ থেকে ডেনমার্ক যাওয়ার উপায়
- বাংলাদেশ থেকে লাটভিয়া যাওয়ার উপায়
- বাংলাদেশ থেকে বেলজিয়াম যাওয়ার উপায়
- বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া ভিসা কিভাবে পাওয়া যায়
- বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে