কোর্ট ম্যারেজ, যেটি আইনি ভাবে বৈধ একত্রিত জীবন শুরুর একটি সহজ উপায়, অনেকেই এটি করে থাকেন পরিবারের সম্মতি ছাড়াই। তবে, কখনো কখনো কোর্ট ম্যারেজের পর নানা কারণে দাম্পত্য সম্পর্ক অটুট থাকে না।
এমন পরিস্থিতিতে, কিছু ব্যক্তি কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার জন্য আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে চান।
তবে কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করা মোটেও সহজ বিষয় নয় এবং এর জন্য কিছু নির্দিষ্ট আইনগত প্রক্রিয়া রয়েছে।
এটি এমন একটি বিষয়, যা আইনগত সঠিক পথে পরিচালিত না হলে ভবিষ্যতে আরও জটিলতা তৈরি করতে পারে।
যদি আপনি কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করতে চান, তবে আপনি কীভাবে এটি করবেন, এর জন্য কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে, কতটা সময় লাগবে এবং খরচ কত হতে পারে—এগুলো জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চলুন, বিস্তারিতভাবে জেনে নিই কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে।
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার নিয়ম ২০২৫
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার জন্য, মূলত কিছু আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়।
বাংলাদেশে, কোর্ট ম্যারেজ বাতিল বা বিচ্ছেদের জন্য দাম্পত্য আইনের আওতায় আবেদন করতে হবে।
তবে, কোর্ট ম্যারেজের বৈধতা বাতিল করতে গেলে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত ও নিয়ম পালন করতে হয়।
১. বিচ্ছেদ বা ডিভোর্সের আবেদন করা
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার প্রথম এবং প্রধান পদক্ষেপ হলো বিচ্ছেদ বা ডিভোর্সের আবেদন করা।
কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে বিয়ে হওয়া ব্যক্তিরা যদি সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসতে চান, তবে তাদের প্রথমে ডিভোর্সের আবেদন করতে হবে।
- বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করা: যদি দুই পক্ষই সম্মত থাকে, তবে তারা বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারে।
- আইনি প্রক্রিয়া: ডিভোর্সের জন্য স্থানীয় পারিবারিক আদালতে আবেদন করতে হয়। এতে একটি নির্দিষ্ট ফি এবং আইনজীবীর সহায়তা দরকার হতে পারে।
২. বৈধতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করা
যদি আপনার কোর্ট ম্যারেজের বৈধতা নিয়ে কোনো সমস্যা থাকে, যেমন—আপনি যদি মনে করেন যে বিয়ের সময় আইনি শর্ত পূর্ণ হয়নি (যেমন, একজন পক্ষ অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল),
তবে আপনি আদালতে বৈধতা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। এই প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে জটিল এবং এতে আইনি পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. প্রমাণ সংগ্রহ করা
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করতে চাইলে, প্রথমে প্রমাণ সংগ্রহ করা প্রয়োজন। প্রমাণের মধ্যে আপনার সই করা কাবিননামা, সাক্ষী, এবং যদি থাকে, স্বাক্ষরিত হলফনামা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই সমস্ত ডকুমেন্ট আদালতে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে।
৪. অভিযোগ দায়ের করা (যদি প্রয়োজন হয়)
কিছু ক্ষেত্রে, যদি কোর্ট ম্যারেজের পরে এক পক্ষ অন্য পক্ষকে শারীরিক বা মানসিকভাবে ক্ষতি করে থাকে, তাহলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন বা অন্য কোনো আইনে অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে। এই ধরনের অভিযোগের মাধ্যমে কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করা সম্ভব হতে পারে।
৫. বিচ্ছেদের সময়কাল
বিচ্ছেদ বা ডিভোর্সের জন্য আবেদন করলে, আদালত সাধারণত ৩-৬ মাসের মধ্যে শুনানি করে থাকেন। তবে, যদি কোনো পক্ষ আপত্তি জানায়, অথবা পরিস্থিতি জটিল হয়, তাহলে এটি দীর্ঘসময় নাও নিতে পারে।
আরও জানুন:
- কোটি টাকা আয় করার উপায়
- ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন শর্ত
- অল্প বয়সে টাকা ইনকাম করার উপায়
- স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম
- অনলাইন ইনকাম অ্যাপ
- অনলাইন ইনকাম সাইট নগদ পেমেন্ট
- বাংলাদেশে অনলাইনে আয় কিভাবে শুরু করব
- ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার জন্য আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র প্রস্তুত করতে হবে:
- বিয়ের কাবিননামা
কাবিননামা হল আপনার বিয়ের আইনি দলিল। এটি কোর্ট ম্যারেজের বৈধতা প্রমাণ করতে ব্যবহার করা হয়। - জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম সনদ
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম সনদ প্রদান করতে হবে যা আপনার বয়স ও পরিচয় নিশ্চিত করবে। - বিচ্ছেদের জন্য আবেদনপত্র
আপনি যদি ডিভোর্সের জন্য আবেদন করতে চান, তবে একটি বৈধ আবেদনপত্র প্রস্তুত করতে হবে। - স্বাক্ষীর নাম ও ঠিকানা
আপনার কোর্ট ম্যারেজের সাক্ষী যারা ছিলেন, তাদের নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। - আইনজীবীর সহায়তা
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সহায়তা নিতে হবে।
কোর্ট ম্যারেজ বাতিলের খরচ
কোর্ট ম্যারেজ বাতিলের খরচ নির্ভর করে আপনার অঞ্চলের আদালতের নিয়ম এবং যে আইনজীবী আপনাকে সহায়তা দিচ্ছেন তার ফি উপর। সাধারণত, কোর্ট ম্যারেজ বাতিলের জন্য কিছু খরচ লাগতে পারে, যার মধ্যে:
- আইনজীবীর ফি
আইনজীবীর ফি সাধারণত ২০০০-১০,০০০ টাকা হতে পারে, এটি নির্ভর করে মামলা ও জটিলতার উপর। - আদালতের ফি
আদালতে বিচ্ছেদ আবেদন করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হয়। এটি প্রায় ৫০০-১৫০০ টাকা হতে পারে। - ডকুমেন্ট ফি
কাবিননামা, হলফনামা ও অন্যান্য কাগজপত্রের জন্য কিছু ফি থাকে, যা প্রায় ২০০-৫০০ টাকা হতে পারে।
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার আইনি দিক
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার জন্য আপনাকে পারিবারিক আদালতে আবেদন করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে যদি এক পক্ষ বিচ্ছেদে সম্মত না হয়, তবে আপনি আদালতের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন।
কোর্ট ম্যারেজ বাতিলের জন্য সাধারণত বিশেষ কোনো আইনি নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কিছু সময় এবং আইনি সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে।
কোর্ট ম্যারেজ বাতিলের পর পরবর্তী পদক্ষেপ
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল হওয়ার পর, উভয় পক্ষ পৃথকভাবে নিজের জীবন শুরু করতে পারেন। তবে, কিছু পরবর্তী পদক্ষেপও থাকতে পারে:
- সম্পত্তির ভাগাভাগি
কোর্ট ম্যারেজের পরে সম্পত্তির ভাগাভাগি সম্পর্কিত বিষয়গুলোও আলোচনা করতে হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, ডিভোর্সের মাধ্যমে এক পক্ষ অন্য পক্ষ থেকে সম্পত্তি দাবি করতে পারে। - পুত্র-কন্যার দায়িত্ব
যদি দাম্পত্য জীবনে সন্তান থাকে, তবে সন্তানের হেফাজত ও দায়িত্ব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
কোর্ট ম্যারেজ বাতিলের সাধারণ সমস্যা
কিছু সাধারণ সমস্যা যা কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার সময়ে সম্মুখীন হতে পারে:
- প্রমাণের অভাব
অনেক সময় কোর্ট ম্যারেজ বাতিলের জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা কঠিন হতে পারে। - আইনি ঝামেলা
আইনি প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হতে পারে এবং এতে অনেক সময় অযথা জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার নিয়ম নিয়ে সাধারণ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার জন্য কত সময় লাগে?
উত্তর: কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার জন্য সাধারণত ৩-৬ মাস সময় লাগে, তবে বিষয়টি জটিল হলে আরও বেশি সময় নিতে পারে।
প্রশ্ন: কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করতে কী ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন?
উত্তর: কাবিননামা, জাতীয় পরিচয়পত্র, হলফনামা, সাক্ষীদের তথ্য এবং আইনজীবীর সহায়তা প্রয়োজন।
প্রশ্ন: কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার জন্য খরচ কত হতে পারে?
উত্তর: সাধারণত ৫০০০-১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে, তবে এটি এলাকায় ও আইনি জটিলতার উপর নির্ভর করে।
উপসংহার
কোর্ট ম্যারেজ বাতিল করার প্রক্রিয়া একটি জটিল আইনি প্রক্রিয়া হতে পারে, তবে সঠিক পদক্ষেপ ও আইনি সহায়তার মাধ্যমে এটি সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।
তবে, সবার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, যা ভেবে চিন্তে নেয়া উচিত।
আরও জানুন:
- কোটি টাকা আয় করার উপায়
- ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন শর্ত
- অল্প বয়সে টাকা ইনকাম করার উপায়
- ঘরে বসেই অনলাইন জিডি করার নিয়ম
- অনলাইন ইনকাম অ্যাপ
- অনলাইন ইনকাম সাইট নগদ পেমেন্ট
- বাংলাদেশে অনলাইনে আয় কিভাবে শুরু করব
DISCLAIMER
এই ব্লগ পোস্ট আর্টিকেল এবং আমাদের স্যোসাল মিডিয়া একাউন্ট এর তথ্য সম্পূর্ন নিরাপদ, যাচাই করা, বিভিন্ন মাধ্যমে থেকে রিসার্স করে সবার উপকারের জন্য নেওয়া হয়েছে। আমরা বন্ধ পরিকর আপনাদের কে নির্ভুল নিতে, তারপর ও যদি আপনাদের কোন অভিযোগ ও কোন বেপার জানার থাকে আমাদের কে মেইল করুন [email protected] ধন্যবাদ।
WhatsApp চ্যানেল এ আমাদের কে ফলো করুন | Follow Us |
Telegram চ্যানেল এ আমাদের কে ফলো করুন | Follow Us |
Facebook Page এ আমাদের কে ফলো করুন | Follow Us |
Quora তে আমাদের কে ফলো করুন- | Follow Us |
Pinterest এ আমাদের কে ফলো করুন- | Follow Us |
Twitter এ আমাদের কে ফলো করুন | Follow Us |
Web Stories এ আমাদের কে ফলো করুন | Follow Us |
TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন | Follow Us |